IQNA

আমেরিকা সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের শ্লোগান দেয়, তবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করে না: সর্বোচ্চ নেতা

19:42 - May 03, 2016
সংবাদ: 2600707
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাইয়ের সাথে এক বৈঠকে আমেরিকার সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের বিষয়ে বলেন: আমেরিকা সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের শ্লোগান দেয়, তবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করে না।

বার্তা সংস্থা ইকনা: আমেরিকার সন্ত্রাসী বিরোধী কর্মতৎপরতাকে দুই ভাগে (ভালো এবং মন্দ) বিভক্ত করে এমন মন্তব্য করেন সর্বোচ্চ নেতা। এছাড়াও তিনি এ সাক্ষাতে এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা বিস্তারে ইরানের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরে বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ইরানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও যোগাযোগ দু’দেশের জন্যই কল্যাণকর।

তিনি বলেছেন, এমনভাবে দু’দেশের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে চুক্তি সম্পন্ন হওয়া উচিৎ যাতে অন্য কোনো দেশের বাধা বা নিষেধাজ্ঞা কোনো প্রভাব ফেলতে না পারে। কারণ ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমেরিকার মোড়লিপনা মেনে নেয়া যায় না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা তার বক্তব্যে ইরানের সঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোর সম্পর্কসহ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মার্কিন প্রভাব ও হস্তক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। ইরান যেহেতু যে কোনো চুক্তি বা সমঝোতা মেনে চলার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাই তেহরান চায় প্রতিপক্ষরাও সব বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি মেনে চলুক। তাই পরমাণু সমঝোতার পর প্রতিশ্রুতি পালনে আন্তরিকতার বিষয়টি প্রমাণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়টি এরই আলোকে মূল্যায়ন করতে হবে।

বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য নানা ধরনের হুমকি ও সংকটে জর্জরিত। বিরাজমান হুমকি মোকাবেলায় যদি সঠিক কর্মপরিকল্পনা নেয়া না হয় তাহলে সংকট আরো গভীর ও জটিল হবে এবং ভবিষ্যতে এ থেকে বেরিয়ে আসা আরো কঠিন হবে। সে অবস্থায় কোনো দেশই ক্ষতির হাত থেকে রেহায় পাবে না। এ ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আমেরিকার পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদকে ভালো ও খারাপ এ দু’ভাগে ভাগ করার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, আমেরিকা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বললেও বাস্তবে তারা মোটেও আন্তরিক নয়। অথচ সবারই এটা জানা আছে যেকোনো সন্ত্রাসবাদই খারাপ এবং জাতিগুলোর নিরাপত্তার জন্য তা অত্যন্ত বিপদজনক। তিনি বলেন, নিরাপত্তা ছাড়া কোনো জাতির অগ্রগতি সম্ভব নয়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা এও বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের তেহরান সফর সব ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিস্তারে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।

বর্তমানে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করা ইরানের প্রধান নীতি এবং ইরানের দীর্ঘ মেয়াদি অর্থনৈতিক অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে দেয়া সাক্ষাতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, অন্য কোনো দেশের মাধ্যমে প্রভাবিত না হওয়াটা দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বিস্তারের অন্যতম মূল নীতি। তিনি বলেন, মার্কিন চাপ ও নিষেধাজ্ঞা যাতে ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যকার সম্পর্ককে আরো ঘনিষ্ঠ করা উচিৎ।

ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা চলাকালে দক্ষিণ কোরিয়া ইরানে তাদের ব্যবসায়ীক উপস্থিতি বজায় রাখার চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু পরমাণু সমঝোতার পর পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বর্তমানে নয়া অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে এবং এ সুযোগকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো উচিৎ। এ ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত সব পক্ষের অর্থনৈতিক উন্নতিতে ভূমিকা রাখবে। এ ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি ইরানের অর্থনীতির উন্নয়নে সর্বোচ্চ নেতার দৃষ্টিভঙ্গি দেশটির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে এবং দক্ষিণ কোরিয়াও নানা ক্ষেত্রে ইরানের সঙ্গে সহযোগিতা বিস্তারে প্রস্তুত রয়েছে।#

iqna

captcha