IQNA

আয়াতুল্লাহ মোজতাহেদী তেহরানি

পবিত্র রমজান মাসে তিন স্তরের রোজা

20:15 - April 09, 2022
সংবাদ: 3471680
তেহরান (ইকনা): বেশির ভাগ মানুষই রোজা রাখার জন্য খাবার খান না বা পানি পান করেন না, তবে মনে হয় রোজা শুধু মুখ অলস রাখার জন্য নয়। “রোজা রাখার” অর্থ হলো শুদ্ধ হওয়া এবং রমজান মাসের ত্রিশ দিন রোজা রাখার কারণে সকল প্রকার গুনাহ থেকে দূরে থাকা। এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য নিজের আখলাক বা নৈতিকতার নিয়ন্ত্রণ ব্যতীত সম্ভব নয়।

রোজা শব্দের পরিভাষার অর্থ হলো, এটি এমন এক শরিয়তগত বাধ্যবধকাতা যেখান একজন মুসলমান ফজরের নামাজ থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নির্দিষ্ট দিনে খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থাকে। যে ব্যক্তি এই কাজ করে তাকে রোজদার বলা হয় এবং ঐ ব্যক্তির কর্মকে (ফজরের নামাজ থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত না খেয়ে থাকা) রোজা রাখা বলা হয়। তবে অধিকাংশ ইসলামিক গ্রন্থে রোজদার ব্যক্তির উপর ফজরের নামাজ থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য না খেয়ে থাকা অথবা পানি পান না করা ব্যতীত অন্যান্য কর্মকেও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসে আত্ম-যত্ন বা স্বযত্নের কথাও বলা হয়েছে।
আয়াতুল্লাহ মোজতাহেদী তেহরানি (1923-2013), ইরানের নৈতিকতা ও দর্শনের একজন নেতৃস্থানীয় অধ্যাপক। তিনি বিশ্বাস করেন যে রোজার তিনটি স্তর রয়েছে। প্রথম স্তরটি সাধারণ রোজা; দ্বিতীয় স্তরটি বিশেষ রোজা এবং তৃতীয় স্তরটি আরও অধিক বিশেষ রোজা।
প্রথম স্তরটি সেই রোজার সাথে সম্পর্কিত যেই রোজার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করা হয়।
এটি রোজার এমন এক স্তর যা সমস্ত মুসলমানদের পালন করা আবশ্যক; অর্থাৎ, তারা কিছু না খাওয়া বা পান না করার চেষ্টা করে, কিন্তু রোজা রাখার বিষয়ে তারা তাদের শরীরের অন্যান্য অংশের যত্ন নেয় না।
দ্বিতীয় স্তর হচ্ছে বিশেষ রোজা। এই স্তরে রোজাদার ব্যক্তি খাওয়া-দাওয়া বর্জন করার পাশাপাশি তার শরীরের সমস্ত অংশকে রোজা রাখতে বাধ্য করে। তার চোখ, তার কান, তার জিহ্বা, তার হাত ও পা এবং তার শরীরের সমস্ত অঙ্গ গুনাহ থেকে বিরত থাকে। চোখকে পাপমুক্ত রাখার জন্য চোখ বন্ধ করার চেষ্টা করে; কানকে পাপমুক্ত রাখার জন্য কান বন্ধ করে রাখে; তিনি কুৎসিত কথা উচ্চারণ করেন না এবং হাত-পা দিয়ে পাপ কাজ করেন না।
তৃতীয় স্তর হচ্ছে আরও আধিক বিশেষ রোজা। যে রোজা আল্লাহর স্মরণের সাথে জড়িত থাকে এবং রোজাদার ব্যক্তি তার অন্তরে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর স্থান দেয় না। এই স্তরে রোজাদার ব্যক্তি যখন নামাজ আদায় করেন, তখন আল্লাহর ভয়ে এবং আনন্দে তার চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হয়; তার নামাজ ভালবাসায় পূর্ণ এবং নামাজ আদায়ের জন্য এবং আল্লাহ তায়ালার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন।

সংশ্লিষ্ট খবর
captcha