IQNA

মুবাহেলা আয়াতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

20:28 - July 22, 2022
সংবাদ: 3472160
তেহরান (ইকনা): এই সপ্তাহে তেহরানের জুমার নামাজের প্রথম খুতবায় হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন আবু তোরাবি ফার্দ  সূরা মুবারাকা “আলে ইমরানেরে” ৬১ নম্বর আয়াতের প্রতি দৃষ্টিপাত করে আয়াতে মুবাহেলার বিষয়বস্তু এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি ব্যাখ্যা করেছেন।

হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন আবু তোরাবি ফার্দ   আজ ২২ জুলাই, তেহরানে অনুষ্ঠিত জুমার নামাজের প্রথম খুতবায় বরকতময় সূরা "আল ইমরান"-এর 61 নম্বর আয়াতের উল্লেখ করে বলেন: 
«فَمَنْ حَاجَّكَ فِيهِ مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ وَنِسَاءَنَا وَنِسَاءَكُمْ وَأَنْفُسَنَا وَأَنْفُسَكُمْ ثُمَّ نَبْتَهِلْ فَنَجْعَلْ لَعْنَتَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ»
অতঃপর তোমার নিকট যখন জ্ঞান (কুরআন) এসে গেছে, এরপরও যদি কেউ (খ্রিস্টান) তোমার সাথে তার (ঈসার) সম্বন্ধে তর্ক-বিতর্ক করে, তবে বল, ‘(আচ্ছা, ময়দানে) এস, আমরা আহ্বান করি আমাদের পুত্রদের এবং তোমাদের পুত্রদের, আমাদের নারীদের এবং তোমাদের নারীদের, এবং আমাদের সত্তাদের এবং তোমাদের সত্তাদের;’ অতঃপর সকলে মিলে (আল্লাহর দরবারে) নিবেদন করি এবং মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষণ করি।
সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৬১।
 
এই দিনগুলো অভিভাবকত্ব ও ইমামতির দিন এবং আমরা মুবাহেলার গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ধারক ঘটনার দ্বারপ্রান্তে রয়েছি, এই বিবেচনায় আমি এই কুরআনী, ইসলামী, রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক ঘটনাকে ঘিরে প্রথম খুতবায় আমার আলোচনাকে স্থান দিব।
 
তিনি বলেন: এই আয়াতটি এমন জ্ঞান ও সত্যকে প্রকাশ ও ব্যাখ্যা করে যা ইসলাম ধর্মের সত্যতা এবং মহানবী (সা.) ও তাঁর সম্মানিত আহলে বাইত (আ.)-এর ব্যতিক্রমী অবস্থান ও মর্যাদার ক্ষেত্রে নির্ধারক ভূমিকা পালন করে।
 
তেহরানের খতিব বলেছেন: জ্বিলহজ মাসের ২৪ তারিখ, মহানবী (সা.) খ্রিস্টানদের একদল প্রবীণ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন যারা সত্যকে মেনে নিতে এবং যুক্তি ও দলীল মেনে নিতে অস্বীকার করেছিল।
মুবাহেলার আয়াতে «نَبْتَهِلْ»"নবতাহেল" শব্দটি এসেছে «بُهل» "বুহল" এর মূল থেকে যার অর্থ সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা এবং এক্ষেত্রে যারা মিথ্যা পথে চলে তাদের জন্য শাস্তি চাওয়ার উদ্দেশ্যে এটি উল্লেখ করা হয়েছে।
আবু তারাবী ফরদ মুবাহেলার বরকতময় আয়াতের বার্তা ব্যাখ্যা করে বলেন: বরকতময় কারিমার এই আয়াতের প্রথম বাণী হলো, ইসলামের রাসূল (সা.) মানুষের পথপ্রদর্শন এবং সত্যকে ব্যাখ্যা করার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন এবং কথাবার্তা, আলোচনা ও তর্ক-বিতর্ক থেকে বিরত থাকেন না। যদি প্রতিপক্ষ যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ না করে, তাহলে মুবাহেলা করতে প্রস্তুত। দ্বিতীয় বার্তাটি হল, ইসলাম মানে জ্ঞান ও বিদ্যা, ইসলাম মানে বিজ্ঞান, ইসলাম মানে প্রমাণিত তথ্য ও জ্ঞান যা বুদ্ধির প্রকৃতি এবং মানুষের আত্মার প্রকৃতিতে নিহিত। আর একারণেই পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে: 
نْ بَعْدِ مَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ وَنِسَاءَنَا وَنِسَاءَكُمْ وَأَنْفُسَنَا»
যদি কেউ (খ্রিস্টান) তোমার সাথে তার (ঈসার) সম্বন্ধে তর্ক-বিতর্ক করে, তবে বল, ‘(আচ্ছা, ময়দানে) এস, আমরা আহ্বান করি আমাদের পুত্রদের এবং তোমাদের পুত্রদের, আমাদের নারীদের এবং তোমাদের নারীদের, এবং আমাদের সত্তাদের এবং তোমাদের সত্তাদের;
সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৬১।
যদি কিছু লোক জ্ঞানের কাছে আত্মসমর্পণ না করে এবং জ্ঞানের বশ্যতা স্বীকার না করে, তবে তাদের অধিকার ব্যাখ্যা করার জন্য তাদের মুবাহেলার  দাওয়াত দিন। এর অর্থ জ্ঞান ও বিজ্ঞান এবং এর অর্থ হল মহান আল্লাহর বাণী এবং আল্লাহর রসূলের বাণী, কারণ এটিই সত্য।
 
 ইরানের প্রভাবশালী আলেম হুজ্জাতুল ইসলাম সাইয়্যেদ মোহাম্মাদ হাসান আবু তোরাবি ফার্দ অপর খুতবায় গোটা পশ্চিম এশিয়া থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে চলে যেতে আমেরিকার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 
আবু তোরাবি ফার্দ বলেন, আফগানিস্তানে আমেরিকা যে অবস্থায় পড়েছিল সে ধরণের অবস্থা তৈরি হওয়ার আগেই আমেরিকার উচিৎ এ অঞ্চল ত্যাগ করা। বর্তমানে এই অঞ্চলে আমেরিকার কোনো কার্যকর রাজনৈতিক ও সামরিক প্রভাব নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জুমার নামাজের খতিব বলেন, বিশ্বে বড় ধরণের পরিবর্তন ঘটছে। তৃতীয় সহস্রাব্দ নিশ্চিতভাবেই এশিয়ার সহস্রাব্দ। এ ক্ষেত্রে ইরানের মৌলিক ভূমিকা রয়েছে।
আস্তানা বৈঠকের কাঠামোর আওতায় তেহরানে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক ত্রিদেশীয় শীর্ষ সম্মেলনের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এই সময়টায় ইরান আঞ্চলিক রাজনৈতিক করিডোরে পরিণত হয়েছিল।
আবু তোরাবি ফার্দ প্রতিবেশী দেশগুলোর নিরাপত্তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ইরান চায় সব প্রতিবেশী দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা নিশ্চিত থাকুক। একইসঙ্গে এই অঞ্চলের জাতিগুলো দৃঢ়তা অর্জন করুক।
খতিব বলেন, সন্ত্রাসীদের প্রতি আমেরিকা ও তার মিত্রদের সমর্থনের কারণে তুরস্ক অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। পশ্চিম এশিয়ায় নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে চাইলে এখান থেকে আমেরিকাকে বিতাড়িত করতে হবে।
4072479

 

captcha